Wednesday, May 11, 2022

নাছোড়বান্দা স্মৃতিসমূহ - তমাল বোস



মে বড় ঝামেলার মাস, একে তো প্রথম দিনেই শ্রমিক দিবস তারপর সারা মাস জুড়ে প্রতিভাবানদের আনা-গোনা, আজ তিন তিনজনের আবির্ভাব, সালভাদোর দালি, রিচার্ড ফাইনম্যান, সাদাত হাসান মাণ্টো।

নাছোড়বান্দা স্মৃতিসমূহ

১৯০৪ সালের ১১মে সালভাদোর দালি জন্মগ্রহন করেন, তাঁর আঁকা সম্ভবত সবচাইতে বিখ্যাত ছবি হচ্ছে দ্য পারসিসটেন্স অব মেমরী, (1931- Oil on canvas - 24 cm × 33 cm (9.5 in × 13 in) , Museum of Modern Art, New York City ) তো এই ছবির একটা ইটালিয়ানপ্রিন্ট আমাদের আগের কাজের জায়গায় ছিল রয়েছে, আর ছবিটা মধ্যে মধ্যেই  বিড়ম্বনায় ফেলত যখন কেউ জিজ্ঞেস করেন “ এটার মানে কি?” ছবির মানে করা হলো একটা অসম্ভব আপেক্ষিক কাজ। এক আমরা স্রষ্টা ও ছবি বিশেষজ্ঞদের লেখা পড়ে মানে বুঝতে পারি অথবা নিজেরা নিজেদের জানা বোঝা ব্যাবহার করে একটা মানে বের করতে পারি আর পারি দুটোকে মিলিয়ে একটা কিছু দাঁড় করাতে, এখানে সেই চেষ্টাই হয়েছে।
    দ্য পারসিসটেন্স অব মেমরী

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে অনেকদিন হলো আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগবে আর কিছুদিনপরেই, ইওরোপ কাপাচ্ছে তিনজন একনায়ক হিটলার, মুসোলিনি আর ফ্রাঙ্কো। জাত্যাভিমান, জাতিয়তাবাদ আর ইহুদিবিদ্বেষ আসল উদ্দেশ্য সমাজবাদী সাম্যবাদী সোভিয়েতের শ্রেনীর লড়াইকে ধংস করা, এদের পেছন থেকে মদত দিচ্ছে আরোসবসাম্রাজ্যবাদী দেশ। লেখক শিল্পী বিজ্ঞানীরা সব দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন নয়তো মেরে দেওয়া হচ্ছে। আর এই সময়েই আমাদের স্ববর্নিত প্রতিভা সালভাদর দালি ভাবছেন তাঁর “নমনীয় ও শক্ত বস্তু নিয়ে”।

হাতে তেমন কাজ কম্ম নেই, ছবি আসছে না মাথায় এবং খানিকটা দারিদ্রতার সমস্যা। সেদিন স্ত্রী গালা আর সব সুররিয়াল শিবিরের বন্ধুদের সাথে গেছেন সিনেমা দেখতে, খাওয়া দাওয়া সেরে অনেক রাতে বাড়ী পৌছে দেখেন ঘরটর সব অন্ধকার, গাউন পরা দালির চোখমুখ অসম্ভব উজ্জ্বল। টান মেরে তাকে কাজের ঘরে নিয়ে গেলেন দালি, একটা ক্যানভাস কাপড় দিয়ে ঢাকা, ঢাকা সরাতেই ... দ্য পারসিসটেন্স অব মেমরী।সেই গলে যাওয়া ঘড়ির ছবি, দালি বলতে অনেকেই যা বোঝেন।

 পকেট ঘড়িগুলো গলে নেতিয়ে পড়ছে যা কিনা শিল্পীর অবচেতনে থাকা স্থান ও কালের আপেক্ষিকতার প্রতীক, আমাদের মহাজাগতিক নিয়মানুবর্তিতারপরাবাস্তবিক প্রেরনা। দালি তাঁর ডায়েরিতে বলছেন “ এছবির ভিত্তিপ্রস্তর সূচিত হয় খাওয়ার টেবিলে”, গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপে ক্যামোবের চীজের গলে যাওয়াদেখে তাঁর মনে হয়েছিল, সময়ও তো এভাবেই গলেযায় রুপান্তরিত হয় আর সেটা চোখে দেখা যায়না, কিন্তু তার ধাবমানতা বোঝা যায়। সময়ের অস্থিরতাকে বোঝাতেই তাঁর ঘড়িরা গলে পড়ে। এবং অবচেতন স্তর থেকেই এছবিতে দালি বুঝতে ও সংযুক্ত করতে চেয়েছেন আইনস্টাইনের স্পেশাল থিওরি অব রিলেটিভিটিকে। 

ছবির মধ্যে আমরা পাই দালির বিমুর্ত আত্মপ্রতিকৃতি যেটা উনি অনেকবার অনেক কাজের মধ্যেই এনে ফেলেছেন, এখানে সেটি একটি হয়ে ওঠা মাছ, যা কিনা সম্পুর্ন রুপ পাবে তাঁর এই সিরিজের পরের ছবি দ্য ডিসইন্টিগ্রেশন অব দ্য পারসিস্টেন্স অব মেমরী’তে, সেখানে মাছ আসবে সব পারমানবিক ধংসলীলার শেষে জীবনেরপ্রতীক রুপে। 

এইছবির বিমুর্ত আত্মপ্রতিকৃতির চোখে অনেক অক্ষিপল্লব লক্ষ করা যায়, কেন? ভাববাদী দালি ও তাঁর স্বপ্নে পাওয়া বস্তুর নিরিখে ব্যাপারটা হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং একটা স্বপ্নের স্তরে রয়েছেন এবং সেটা দালি নাকি সেটাও স্বপ্নে দেখেছেন, বোঝো কান্ড। সিগমুন্ড ফ্রয়েডের (ইনিও মে) ইন্টারপ্রেটেশন অব ড্রিম তিনি নিজের মত করে নিয়ে কাজ করে গেছেন, আর স্বয়ং ফ্রয়েড বলছেন দালির মত একগুয়ে স্প্যানিয়ার্ড তিনি নাকি আর একটিও দেখেননি। 

যাই হোক, এছবিতে আমরা আর একটা কমলারঙা ঘড়ি দেখি যার মধ্যে বহু কালো পিঁপড়ে খুবলে খাচ্ছে, এই সেই পিপড়ের দল, যা কিনা দালির কাছে ক্ষয়ের প্রতীক। তবে দালির কথা ধার করেই বলাযায় যে অবচেতনে রয়ে যাওয়া সৌরকলংকের একটি মূর্ত ধারনা এটি। আর ছবিতে যে প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী পরিলক্ষিত হচ্ছে তা একেবারেই তাঁর একান্ত প্রিয় ছুটি কাটানোর জায়গা কাটালনিয়ায় বসবাসকালিন ইমেজারি, বহু ছবিতে এই নৈসর্গ তিনি এনেছেন।

এই সিরিজের পরের ছবি দ্য ডিসইন্টিগ্রেশনঅব দ্য পারসিস্টেন্স অব মেমরী - যেখানে পদার্থবিদ্যার আরেক ধারা কোয়ান্টাম মেকানিকস (Feynman- may
) পরাবাস্তববাদী ধারনা পাবো।  

    রিচার্ড ফাইনম্যান

ফাইনম্যান কে? 

"সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কিন্তু পদার্থবিজ্ঞান নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালোবাসা।"
ছোটবেলায় নষ্ট রেডিও সারতে ওস্তাদ হয়ে ওঠে ছেলেটি। দস্যি ছেলের কিশোর বয়সে ক্যালকুলাসে দক্ষতা স্কুলের শিক্ষকদের কাছে প্রিয় করে তোলে। এই ছেলেই বিশ শতকের অন্যতম পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফিলিপ ফাইনম্যান। 

১৯১৮ সালে জন্ম নেওয়া মার্কিন বিজ্ঞানী ফাইনম্যানের গবেষণার ক্ষেত্র ছিল কোয়ান্টাম বলবিদ্যা ও কণা পদার্থবিজ্ঞান। তিনি এমআইটি থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ও প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি সর্বকনিষ্ঠ গবেষক হিসেবে পারমাণবিক বোমা তৈরির ম্যানহাটন প্রজেক্টে অংশ নেন। 

১৯৪৫ সালে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক ও ১৯৫০ সালে ক্যালটেকে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। এখানে কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিকস ও অত্যধিক শীতল তরল হিলিয়ামের কণাপ্রবাহ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এ সময় অতিপারমাণবিক কণার আচরণ বিশ্লেষণের ওপর একটি ডায়াগ্রাম প্রকাশ করেন, যা পরে ‘ফাইনম্যান ডায়াগ্রাম’ নামে পরিচিতি পায়। 

"বিজ্ঞানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো, এটি জীবন্ত।"

ফাইনম্যানের ছিল পেল্লাই এক ম্যাক্সিভ্যান গাড়ী, যার সারা গায়ে ফাইনম্যান ডায়াগ্রামস আকা ছিল, কেউ সেটা কেন আছে জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসতো " কারন আমি ফাইনম্যান" ২০১৪ সম্ভবত বিজ্ঞানীদের ভোটে " জনপ্রিয়তম বিজ্ঞানীর লিস্টে সপ্তম" হন ফাইনম্যান গ্যালিলিওর ঠিক পরেই। 

"প্রকৃতিকে জানতে হলে, তার সৌন্দর্যকে অনুধাবন করতে হলে প্রকৃতির ভাষা জানা চাই।" পদার্থবিজ্ঞানের জটিল তত্ত্ব সবাই যেন সহজেই বুঝতে পারে, সে জন্য সহজ ভাষায় তিনি লেকচার দিতেন। এ কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি ‘দ্য গ্রেট এক্সপ্লেনার’ হিসেবে খ্যাতি পান। ‘দেয়ারস প্লেনটি অব রুম অ্যাট দ্য বটম’ নামের বিখ্যাত লেকচারে ন্যানোটেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা দেন।

তার কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিকস ও দ্য থিওরি অব ফান্ডামেন্টাল প্রসেসেস নামের দুটি বিখ্যাত বক্তব্যসমগ্র রয়েছে। ১৯৬৫ সালে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি কোয়ান্টাম কম্পিউটার সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। 

"সব মৌলিক প্রক্রিয়াকেই উল্টোদিকে চালনা করা সম্ভব।" এই পদার্থবিজ্ঞানী Anticlock নামের চলচ্চিত্রে অধ্যাপক হিসেবে অভিনয় করেন। গবেষক পরিচয় ছাড়াও তিনি শিওরলি ইউ আর জোকিং, মি ফাইনম্যান! ও হোয়াট ডু ইউ কেয়ার হোয়াট আদার পিপল থিংক ( Ralph Leighton) নামের রম্য বইয়ের জন্য বিখ্যাত।

তিনি নভোখেয়া চ্যালেঞ্জার ধ্বংসের কারণ অনুসন্ধানের রজারস কমিশনের বিশেষজ্ঞ ছিলেন। "দুবার মরতে হলে ব্যাপারটাকে আমি ঘৃণা করতাম। কারণ মৃত্যু খুবই একঘেয়ে ব্যাপার।" তিনি একজন স্পেশালিষ্ট বঙ্গো বাদকও বটেন।

১৯৮৮ সালে লিপোসারকোমা ও ম্যাক্রোগ্লুবুলিনেমিয়া নামের দুরারোগ্য ক্যানসারে মারা যান এই বিজ্ঞানী।
"যা আমি তৈরি করতে পারি না, তা আমি বুঝি না।" (মৃত্যুর পর তাঁর চকবোর্ড থেকে নেয়া হয়েছে।)

    সাদাত হাসান মান্টো

মৃত্যুর কথায় মনে পড়ল মান্টোকে।

উর্দু কথাসাহিত্যের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর সাদাত হাসান মান্টো। জন্ম—১৯১২ সালের ১১ই মে পাঞ্জাবের লুধিয়ানার সোমরালা গ্রামে।   দেশ বিভাগের দাঙ্গা ও পতিতাদের নিয়ে লিখেছেন কিছু অসাধারণ গল্প। বুর্জোয়া সমাজের সকল ভণ্ডামি এবং অপকর্মের বিরুদ্ধে মান্টো সারা জীবন লড়াই করেছেন, অশ্লীলতার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন, কিন্তু নতি স্বীকার করেননি।

মান্টো ব্রিটিশ আমলে ‘বু’, ‘কাল সালোয়ার’ প্রভৃতি গল্পের জন্য যেমন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন তেমনি পাকিস্তান আমলেও ‘ঠান্ডা গোশত’, ‘খুলে দাও’, ‘উপর, নিচে ও মাঝে’ গল্পগুলির জন্য দেশের মূল্যবোধের বিরোধী হিসেবে অভিযুক্ত হন। দুই আমলেই আইনের ধারা ২৯২। 

মান্টোর ইংরেজি  অনুবাদক খালিদ হাসান বলেছেন, ‘মান্টো শুধু আমাদের দক্ষিণ এশিয়া মহাদেশের নয়, সারা দুনিয়ার সবচেয়ে বড় লেখকদের একজন।’ একথা ষোল আনা সত্য।

মান্টোর লেখালেখির জীবন দুই দশকের। এসময় লিখেছেন ২২টি গল্পগ্রন্থ, ৫টি বেতার নাটক ও একটি উপন্যাস। তাঁর লেখালেখির জীবন ও সমকালীন উপমহাদেশের রাজনৈতিক ক্রমপঞ্জি মিলিয়ে দেখা যাবে, তিনি ব্রিটিশ শাসনের চূড়ান্ত পর্যায়, দেশভাগ ও উপনিবেশ-উত্তর পাকিস্তানের মূলধারার ইতিহাসের এক অস্বস্তিকর সাক্ষী। তাঁর নির্মম সমালোচনায় ঝুড় ঝুড় করে ভেঙ্গে পড়ে সমাজের কৃত্রিম জাঁকজমক।

১৯৩৪ সালের আগস্টে লাহোর থেকে প্রকাশিত ‘খালক’ নামক সাহিত্য পত্রিকায় মান্টোর প্রথম গল্প ‘তামাশা’ ছাপা হয়। গল্পের বিষয়বস্তু সাত বছরের এক বালকের চোখে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড।

জালিয়ানওয়ালাবাগের সভাকে কেন্দ্র করে যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছিল তার কারণ জিজ্ঞাসিলে খালেদ নামক বালকের পিতা বলেন একটা তামাশা হতে যাচ্ছে। খালেদ আকাশে দেখে চিল চক্রাকারে উড়ছে, প্লেনের পেট থেকে বোমের ডিম পারার গল্প শুনে রোমাঞ্চিত হয়। বাবা খালেদকে তামাশা দেখতে নিয়ে যাবেন এই আশ্বাস দেন। যথারীতি ঘটনার দিন খালেদের উৎসাহ নিবৃত্তিতে বাবা বারবার বলেন তামাশার এখনো অনেক বাকি, সবুর কর বেটা। খালেদ দোতলার জানলা থেকে মাঠের দিকে তাকিয়ে থেকে, আর গুলির শব্দে চমকিত হয়, ভাবে তামাশা শুরু হয়ে গেছে, বাবা কেন এখনো রওনা দেন না! একটা তীক্ষ্ণ ক্ষীণ আর্তচিৎকার ক্রমশ দ্রুতলয়ে বিকট হয়ে ওঠে। সে দেখে একটি ছেলে দৌড়ে পালাচ্ছে। তার পায়ের জখম থেকে ঝড় ঝড় করে রক্ত ঝড়ছে। ছেলেটি খালেদের বাড়ির সামনে লুটিয়ে পড়ে, জ্ঞান হারায়। খালেদ দৌড়ে বাবার কাছে গিয়ে বলে ছেলেটিকে বাঁচাতে। বাবা অজানা এক গম্ভীরতায় নিশ্চুপ  থাকেন। খালেদ মার কাছে ছুটে যায়। মা, ছেলেটির কি হয়েছে? মা বলেন, দুষ্টুমি করায় শিক্ষক মেরেছেন। খালেদের পাল্টা প্রশ্ন, কই শিক্ষক মারলে তো রক্ত ঝড়ে না! ছেলেটির বাবার উচিত শিক্ষককে ভাল করে বকে দেওয়া। মা বলেন এই শিক্ষক ছেলের বাবার চেয়ে অনেক বড়, কিছু বলা যাবে না। আল্লাহর চেয়েও কি বড়? খালেদের মা বলেন, না তা নয়। তবে আল্লাহর কাছেই ছেলের বাবার নালিশ দেওয়া  উচিত বলে খালেদ সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। তার মনে একটি প্রশ্ন রয়েই যায়, মানুষকে গ্রেপ্তারের জন্য এত পুলিশ ভ্যান আছে কিন্তু এই মৃতপ্রায় ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় জন্য কোন যানবাহন নেই কেন? সাত বছরের এই বালকের প্রশ্নের মুখে আমাদের চুপ করে থাকতে বাধ্য করেন মাণ্টো তার আরো অনেকানেক কাজের মত যথা খোল দো, ঠান্ডা গোস্ত, বু, নয়া কানুন, কাল সালওয়ার ইত্যাদি। 

কৃষণ চন্দর মান্টোর সাথে আড্ডার স্মৃতি নিয়ে বলেছিলেন, আপনি যদি জিন্নাহ বা গান্ধির প্রশংসা করেন তাহলে সে পাড়ার মুচির ব্যক্তিত্বের মহিমা গাইবে।

মান্টো ১৯৫১-৫২ সালে দুবার পাগলা গারদে ছিলেন।

১৯৫৫ সালের ১৮ জানুয়ারি। আগেরদিন এক বীভৎস গল্প শুনে সারাদিন মদ খেয়ে কাটিয়েছেন মান্টো।সকাল দশটার দিকে হঠাৎ তীব্র খিচুনি শুরু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স আসে। দরজায় অ্যাম্বুলেন্স দাড়িয়ে, ব্যথায় কোঁকড়ানো, তবু একটু মদ চাইলেন। তার মুখে এক চামচ হুইস্কি ঢেলে দেওয়া হয়। এক বিন্দু অতি কষ্টে গলার ভিতর প্রবেশ করেছে। অবশিষ্ট মদ মুখের বাইরে পড়ে যায়। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মান্টো অ্যাম্বুলেন্সে মারা যান।  ৪২ বছরের এক চামচ জীবন ফুরিয়ে যায়।

ঋণ - "Dali, The Flamboyant Surrealist", MoMa, প্রথম আলো আর্কাইভ, পথিক গুহ, জন গ্রিবিন, অ্যালেন স্টিভেন, আয়েশা জালাল,আবিদ হুসেইন।

লেখার কোনোও কপিরাইট নেই, লেখকের নাম সহ বা নাম ব্যাতিরেক যে কেহই ইহা অবাণিজ্যিক ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যবহার করিতে পারেন।

Labels: , ,

0 Comments:

Post a Comment

Subscribe to Post Comments [Atom]

<< Home